সেক্স এডুকেশন কি?
আমাদের বেড়ে ওঠার সাথে সাথে কেন শরীরের অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বদলাতে থাকে ?কেন শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোম গজায়? বয়ঃসন্ধিতে কেন আমাদের কারনে–অকারনে মন খারাপ হয়? কেন মাসিকের সময় ডিপ্রেশন অথবা মুড বদলাতে থাকে অকারনেই ? কেন প্রজনন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নানা রোগের শিকার হয়? কেন পরিবার–পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে জানা জরুরী? শারীরিক পরিশ্রম এর সাথে ভার্জিনিটির সম্পর্ক কি? কেন মেয়ে সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একজন পুরুষ ই দায়ী? কেন মাসিক নিয়ে লজ্জা পাওয়া উচিত না? কেন একটা ছেলের বয়ঃসন্ধিতে অস্বাভাবিক রকমের মানষীক এবং শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় ,যা কিনা কারো চোখে পড়েনা?
এসব কিছুর উত্তর পাওয়া যায় সেক্স এডুকেশন এর মাধ্যমে। সর্বোপুরি, আমার আমিকে খুজে পাওয়া যায় এবং প্রচলিত কুসংস্কারকে এড়িয়ে বাধাকে জয় করা যায় ,যদি সেক্স এডুকেশন সম্পর্কে আমাদের বিজ্ঞানসম্মত ধারনা থাকে।
ঊদ্দ্যেশ্য-
- ‘সেক্স’ শব্দটার সঠিক অর্থ আমাদের সমাজে প্রচলিত না ,তাই প্রয়োজনীয় এবং সঠিক জ্ঞানের অভাবে সেক্স এডুকেশনও অনেকটাই অবহেলিত। নিজেকে জানার অপর নাম ‘সেক্স এডুকেশন’ সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা বললেও খুব একটা ভুল হবে না কেননা এই অবহেলিত শিক্ষার মধ্যেই রয়েছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক গুরুত্ত্বপূর্ন তথ্য ।
- তাই প্রেশক্রিপশন বাংলাদেশের প্রকৃত উদ্দেশ্য সেক্স এডুকেশন সম্পর্কে তরুন–তরুনীদের সঠিক বিজ্ঞান সম্মত ধারনা প্রদান করা এবং মা–বাবা–সিনিয়রদের সেক্স এডুকেশন নিয়ে কথা বলার জন্য উৎসাহিত করা এবং সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার দূর করা।
- কেননা আমাদের সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থায় এই বিষয়গুলো এতো গুরুত্বের সাথে পড়ানো হয়না, এমনকি সব বিষয়গুলো সিলেবাসেও নেই আর থাকলেও ক্লাসে সেই অর্থে পড়ানো হয়না। এতে করে একটা ছেলে অথবা মেয়ে তার বয়ঃসন্ধিকালে সেসব শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় ,সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতেই পারছেনা । ফ্যামিলির কাছেও হয়তো সেই অর্থে কোনো প্রশ্ন করতে পারে না লজ্জায় অথবা ভয়ে। তখন হয়তো বন্ধুবান্ধব, সমবয়সী অথবা ইন্টারনেট থেকে ভুল তথ্য পেয়ে যাচ্ছে ,যা সুস্থ মানষিক বিকাশের অন্তরায় ।
প্রেশক্রিপশন বাংলাদেশের কর্মপরিকল্পনা
- সর্বোপরি বয়স ,জাতি ,ধর্ম ,বর্ণ নির্বিশেষে অনলাইন ভিত্তিক এই জ্ঞান ব্যবস্থার চালু করা হয়েছে মূলত সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারের বাইরে গিয়ে, সবাইকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে নিজের সম্পর্কে জানার উপায় বের করে দেয়া ।
- কেননা ইন্টারনেটে সেক্স এডুকেশন লিখে সার্চ দিলে সেই অর্থে কোনো বিজ্ঞানসম্মত সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না , আর যেসব হাই লেভেলের সায়েন্টিফিক জার্নার আর্টিক্যাল আছে ,তা পড়ে সবার পক্ষে বোঝা সম্ভব না । তাই আমাদের প্রধান কর্ম–পরিকল্পনা হলো মাতৃভাষায় অনলাইন শিক্ষা প্রধান করা, যাতে করে সেক্স এডুকেশন সম্প্রসারণে সঠিক বিজ্ঞানসম্মত তথ্যের অভাবে কারো মানষিক স্বাস্থের ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
- চাইলেই একদিনে শিক্ষা ব্যাবস্থাকে বদলে দেয়া যাবে না। তবে প্রেশক্রিপশন বাংলাদেশ বিশ্বাস করে পরিবার থেকে যদি এই শিক্ষা চালু করা হয়, তাহলে এতটুকু নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে বয়ঃসন্ধিকালে যে মানসিক এবং শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে একটা মানুষকে যেতে হয় তার জন্য অন্তত মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। আরও আশা করা যায়, পরিবারের সাথে বন্ধুত্ত্বপূর্ন সম্পর্ক শিশুর পরিপূর্ন মানষিক বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে যা তাকে ভবিষ্যতে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
একসাথে বাধাকে করবো জয়-আমরা করবো জয়
সেক্স এডুকেশন এর মানেটা সেই অর্থে আমাদের সমাজে এবং শিক্ষা ব্যাবস্থায় প্রচলিত না, যার কারনে এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক জড়তা কাজ করে। উদাহরন সরূপ অনেক অসংগতি ঊঠে আসবে আমাদের সমানে। এই যেমন, একটা উঠতি বয়সের বাচ্চা যখন টিভিতে কনডম অথবা প্যাড এর বিজ্ঞাপন দেখে প্রশ্ন করে এটা কি , বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ‘এটা বড়দের ব্যাপার বলে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেয়া হয়’। আবার যখন বয়ঃসন্ধিতে বিভিন্ন ধরনের হরমোনাল পরিবর্তনের কারনে শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়, এটা নিয়েও বাচ্চাদের ছোটাবেলা থেকেই সঠিক তথ্য দেয়া হয়না বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই । এতে করে বেড়ে ওঠার সাথে সাথে , শারীরিক এবং মানষিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে, সঠিক তথ্যের অভাবে একটা মানুষের পরিপূর্ন মানষিক বিকাশ সম্ভবপর হচ্ছে না। আর মানষিক স্বাস্থ্য কে বাদ দিয়ে, জীবনে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়তো একটু বেমানান।
তাই আমরা চাই পরিবার সর্বপ্রথমে এগিয়ে আসুক ,আমাদের জানতে হবে সেক্স এডুকেশন কি এবং কেনো এটা পরিপূর্ন মানষিক বিকাশে সহায়ক। তাই ,প্রেশক্রিপশন বাংলাদেশের প্রধান উদ্দেশ্য তরুন-তরুনীদের পাশাপাশি পরিবারকে বিজ্ঞানসম্মত তথ্য প্রধানে সহায়তা করা ,সচেতন করা এবং ছেলে-মেয়েদের মানষিক স্বাস্থ্য সংরক্ষনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সেই লক্ষে কাজ করা।